ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ৮-০২-২০২৩ প্রথম ক্লাস শুরু হবে জেনে আমি ০৭-০২-২০২৩ তারিখে (দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল) বর্তমানে, জুলাই ৩৬ হলের নতুন ব্লক ৩০৬ নাম্বার রুমের আমার জেলার এক আপুর সীটে উঠি।তিনি হল এ তেমন থাকে না তাই আমাকে বলছিল যতোদিন ইচ্ছা থাকো সমস্যা নেই কোনো।ওই রুমে ৪ বেডে আটজন থাকতো, রুমের সব গুলো আপু আমার সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করতো। আমার ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্ট এর এক আপু ছিল ওই রুমে তিনি কয়েক টা বই দিয়ে দেখতে বললো, যে এগুলো তোমার পড়তে হবে।৮ তারিখ আমাদের ডিপার্টমেন্ট এ নবীন বরণ অনুষ্ঠান। সকালে ডিপার্টমেন্ট এ নিয়ে গেল আমাকে সেই আপুই। আনুষ্ঠানিক প্রোগ্রাম শেষ আমাদের আগের ব্যাচ একটা ক্লাস রুমে নিয়ে গিয়ে Ragging এর প্রথা অনুযায়ী একে একে সবার উপরে রাগ দেখানো, ম্যানার শিখানোর নামে ধমকানো শুরু করে দিল। জুনিয়র দের উপর খারাপ ব্যবহার করতে পারা টা একটা আর্ট মনে করেছে । আমি হল এ উঠছি বলিনি তাই একটু বেশি ই রাগ দেখালো আমার উপর,আমার হলে থাকে তাবাচ্ছুম নামে একটা মেয়ে।বললো রাত আটটায় দেখা করিস প্রজাতির ২ নাম্বার গণরুমে। আমি সেই দিন বিকেলে রুমে গিয়ে আর বের হয়নি, গণরুম কোথায় জানি ও না।রাতে রুমের আপুরা আমার খাবার টা ও রান্না করেছিল তাই আমার আর নিচতলায় খেতে যেতে হয় নাই।
শুক্রবার রাতে খেতে গিয়ে ডাইনিং এ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, হল এ নতুন উঠা মেয়েদের চোখে মুখে ভয় কে কখন দোষ ধরে। যাকে সামনে দেখছে তাকেই সালাম দিচ্ছে, খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে ও। ডিপার্টমেন্ট এর সিনিয়র তার রুমে যেতে বলেছে তাই একজন মেয়ের থেকে জেনে সেই রুমে গিয়ে প্রথমেই সবাই কে সালাম দিছি। বলেছিলাম ফিন্যান্স এর কোনো আপু আছে এ রুমে,তারা দেখায়ে দিল, ঘুমাচ্ছে জন্য বললাম ডাকার দরকার নেই আমি অন্য দিন আসবো।
শনিবার সকালে ক্লাসে গেছি, আমাদের আগের ব্যাচ এসে সবাই উপর রাগ শুরু করে দিল ,তাবাচ্ছুম নামের মেয়েটি বললো আমার রুমে কে গেছিল? আমি দাঁড়ালাম, আমাকে বলতে শুরু করল, রুমের সবাই বলছে তুই কাউকে আপু বলিস নি, আমি বললাম সালাম দিছি হয়তো আপু বলার কথা খেয়াল নেই। আমার উপর যা নাই তা বলা শুরু করলো ,উপরে থাকিস বলে সাপের পাঁচ পা দেখছিস, আমাদের আপু মনে হয় না!! এভাবে অনেক টা গরম নিল, আমি কান্না করতেছিলাম, তাদের খারাপ আচরণে আরো ৪,৫ জন্য কান্না করে দিছিল নতুন এসে এভাবে এতো খারাপ ব্যবহার সহ্য করার মতো না, কয়েক টা সিনিয়র মেয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে গেল,বলে কান্না করিস কেন,তোকে কান টেনে দিতে ইচ্ছে করছে,বলে আমি কি বলছি জন্য কান্না করলি বল, শুধু বলছিলাম হল এর কোনো সমস্যা আমাকে সবার সামনে বলেন না, কোনো অপরাধ করে থাকলে আমাকে একা বলেন। আমি ও সিনিয়রদের সাথে ভালো ব্যবহার করার এবং সম্মান করার চেষ্টা করেছিলাম। সেই দিন ও বললো রাতে আমার রুমে আসিস।
রাত ৭.৩০ এ ডাইনিং এর খাবার খেয়ে তার রুমে গিয়ে সবাই কে সালাম দিছি।একে একে গণরুমের সবাই আমার পরিচয় জানতে চাইলো ,৫ লাইনের পরিচয় শিখিয়ে দিছিল ডিপার্টমেন্ট এ প্রথম দিন সিনিয়ররা। আমার ডিপার্টমেন্ট এর সিনিয়র ২ টার সাথে কথা বলে ভালোই ভালো চলে আসবো ।তখন বললো , সবার সামনে গণরুমে অনেক মেয়ে,তোর সাহস হয় কেমনে যে আমাকে বলিস হলের সমস্যা ,হল এ বলবেন ডিপার্টমেন্ট না,তোর কথা আমার শুনে চলতে হবে , মুখে উপর আঙ্গুল তুলে রাগ দেখাচ্ছিল, আমি শুধু বললাম শান্ত ভাবে,আপনে আমার ডিপার্টমেন্ট এর সিনিয়র এমন আচার ব্যবহার করতে পারেন না, আমাকে ভালো না লাগলে আমার সাথে কথা বলেন না,বলে চলে আসবো আরাকটা সিনিয়র হাত ধরে ফেলল চলে আসতে দিল না, চিল্লাচিল্লি করে আরো মেয়ে দের ডেকে এনে যা নয় তাই বলা শুরু করে দিল বলল চিনিস আমায় আমি কে, আমার বয়ফ্রেন্ড ইবি ছাত্রলীগের নেতা। কয়েক জন মিলে বললো তোকে এখন ই ঘাড় ধাক্কা দিয়ে হল থেকে বের করে দিব তাই বলে এক নেত্রী কে ভিডিও কল দিল। আমায় বললো কি হয়েছে ,বললাম আমি কিছু করি নি , খারাপ কিছু বলি নি ,ওরা বানায়ে বলছে যা বলছে সব, আমাকে এই রুমে আটকায়ে রাখছে যেতে দিচ্ছে না তারা আমাকে ইবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নেত্রীর কাছে নিয়ে গিয়ে বিচার দিল,বললো আমি নাকি গণরুমের সবাই কে হুমকি দিয়েছি,সবাইকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে চেয়েছি। আমি বলি এগুলো সব মিথ্যা কথা তখন ওই নেত্রী বলে, আমার মেয়ে দের আমি শিখিয়েছি ওরা মিথ্যা বলে না, তার কানে আগেই গেছে যে তিন তলায় নবীন শিক্ষার্থী উঠছে। তুললো কে! আরো বললো আমি কোনো মেয়ে কে উপরে তুলি নি কার এতো সাহস তোকে উপরে তুলছে। সেই নেত্রীর নাম অন্তরা।যে হল এ তুলছে আমাকে ফোন দিল,সে বললো ও তো এমন মেয়ে না, আবার তাবাচ্ছুমের বয়ফ্রেন্ড কল দিয়ে বলছে আপু বিচার করে দেন, নেত্রী অন্তরা ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত কে কল দিয়ে সব বললো, প্রভোস্ট স্যার কে বললো স্যার এই মেয়ে কে হল এ রাখবো না কাল আসেন এর ব্যবস্থা হবে, আমার রুমের আপুদের ও নিয়ে এসে বলে ওকে একটা একটা করে থাপ্পড় দে। রাত আটটা থেকে প্রায় ১ টা পর্যন্ত নেত্রী রা আরো গণরুমের সব মেয়েরা মিলে আমার ফোন কেড়ে নিয়ে যা নয় তা বলে যাচ্ছিল, রাত বারোটায় হল থেকে বের করে দিবে। আমি তো শুধু কান্না করে যাচ্ছিলাম , কিছু বলার ভাষা নেই আমার। আমার রুমের এক আপু সহ্য করতে না পেরে বললো তুমি আপুর পা ধরে ক্ষমা চাও, আমি এদের হাত থেকে রক্ষার জন্য তাই করেছি তখন সেই নেত্রী আমার সাথে ই আমার রুম পর্যন্ত গেল আর বললো ওকে চোখে চোখে রাখিস আবলতাবল কিছু করে যেন না বসে,আর অন্য দের বলে দিল, কাল দুপুর দুইটায় তোরা থাকিস ওকে হল থেকে বের করে দিব। সেই দিন রাতে ঘুমাতে পাড়ি নি,ওরা যা ব্যবহার করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারি না।
আমার গ্রামের এক স্যার আছেন ইবিতে। তিনি বায়োটেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট এর প্রফেসর। ক্যাম্পাসে যাওয়ার প্রথম দিন ই স্যারের সাথে কথা হয়েছিল। স্যার, স্যাররে ডিপার্টমেন্ট যেতে বলেছিলেন, কিন্তু আমি কিছু চিনি না,কোনো বন্ধু বান্ধবী নেই তাই ভাবছিলাম কিছু দিন পর যাব, সকালে উঠে স্যার কে ফোন দিয়ে বললাম হলে একটা সীট এর ব্যবস্থা করে যদি দিতেন, আমার পরিবারের অবস্থা ভালো না মেসে থাকার সমর্থ নেই।আর নেত্রী রা খারাপ ব্যবহার করেছে তা বললাম, স্যার তার ডিপার্টমেন্ট এ যেতে বললেন। সেই দিন সকালে রুমের আপুরা বলছিল তোমাকে আসলে হল এর বিষয়ে আগেই জানানো উচিত ছিল। আমি স্যারের ডিপার্টমেন্ট গেলাম, স্যার গ্রামে তেমন যায় না তাই অনেক কিছু ই শুনলেন, ভাই-বোন কয়টা, বাবা কি করেন,আর নেত্রী ও তার মেয়েরা যেমন ব্যবহার করেছেন তা বললাম একটু। স্যার তা আবার আমার ডিপার্টমেন্টর পাবনা জেলার স্যার কে বলে দিছেন, আমাকে ফোন নম্বর দিয়ে ডিপার্টমেন্ট এর স্যার এর সাথে দেখা করতে বললেন।আর বললেন, আমি হল প্রভোস্ট এর সাথে কথা বলবোনে ।যে স্যার এর কাছে পাঠাইছিলেন তিনি ছিলেন না অন্য একটা স্যার বললেন কয়দিন গেলে গেলে ঠিক হয়ে যাবে। আমি হলে চলে আসলাম।
দুপুর দুইটা ,সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয় নি। আমি ডাইনিং এর টোকেন নিয়ে অপেক্ষা করতেছিলাম পাঁচ মিনিট এর মধ্যে খাবার দিবে।৭,৮ টা মেয়ে এসে ডাইনিং থেকে আমাকে ধরে নিয়ে গেল নিচ তলায় ছাত্রলীগের অনেক মেয়ে জমা হয়েছে, সবাই মিলে ফোন কেড়ে নিল আমার থেকে, আমাকে অকথ্য ভাষায় বকা দিচ্ছে,হাত চেপে ধরে ব্যাথা দিচ্ছিল নেত্রী সহ সবাই মিলে প্রভোস্ট স্যার এর রুমে নিয়ে গেল। স্যার এর কাছে নেত্রীর হুকুমে আমার নামে যা খুশি বলে অভিযোগ দিল,বলতেছিল, স্যার ওকে এখন ই হল থেকে বের করে দেন, স্যার কে শুধু বললাম যা বলছে ওনারা সব মিথ্যা বলছে। স্যার তো নেত্রীর কথা ই শুনবে, স্যার বললেন যেহেতু এতো অভিযোগ আর তুমি আমাদের জানিয়েও হল এ উঠোনি,তাহলে তুমি কিছু দিন বাইরে থাকো, বললাম স্যার আমার ফোন দিচ্ছে না। তখন স্যার বললেন, ফোন দিয়ে দাও।ওরা তখন ও আমাকে চলে আসতে দেয় নাই,টেনে ছিচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন বললাম আমাকে যেতে দেন, তিনতলায় শুধু একটা ব্যাগ আছে নিয়ে চলে যাচ্ছি,যে ভাই টা আমাকে তার বান্ধবীর সীটে থাকতে দিছিল তিনি ও বলতেছিল নেত্রীকে কলে আপু ওকে চলে আসতে দেন।দেয় নাই, আমাকে টেনে ছিঁড়ে হল গেটে নিয়ে যাচ্ছিল আর বলতেছিল আপু শুধু হুকুম দেন ওকে মারার জন্য আমার হাত কামড়াচ্ছে। এমন ভাষায় বকতেছিল হল গেটে নিয়ে গিয়ে তা শুধু জঘন্য মেয়েরাই বলতে পারে।কেউ মুখে উপর হাত ঝাকিয়ে ঝাঁকিয়ে বকা দিচ্ছিল । সেই ইবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নেত্রী অন্তরা শুধু ফোনে কথা বলে যাচ্ছিল, ইবি ছাত্রলীগের এক নেতা বাইক নিয়ে এসে নেত্রীর সাথে কথা বলতেছিল, আমি কারো কথায় কান না দিয়ে ভাবতেছিলাম মানুষ কতো নির্দয়।
আমি সেই সুযোগে আমার গ্রামের স্যার কে আবার কল দিয়েছিলাম। তখন আমাকে আবার প্রভোস্ট স্যার এর রুমে নিয়ে গেল, গ্রামের স্যার কল দিল তখন আমি প্রভোস্ট স্যার এর সাথে কথা বলিয়ে দিলাম, স্যার আমার কথা পরিবারের কথা যেই বললো ওর দুই ভাই বোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ওর বাবা একজন ভ্যানচালক। মেয়ে দের উপর ধমক দিয়ে বললো তোমাদের এতো জোর গলায় কথা বলার সাহস আসে কোথা থেকে, আমি একটা ডিপার্টমেন্টর প্রফেসর আমার সামনে এতো জোরে কথা বলো! একটু পর দুই টা সহকারী প্রক্টর স্যার আসছে। আমাকে অন্য রুমে পাঠায়ে দিয়ে সব মেয়েদের অভিযোগ নিল। পরে আমাকে ডেকে এনে বললো কি হয়েছে বলো , আমি কিছু বলতে চাইনি, শুধু বললাম স্যার আমাকে হল থেকে বের করে দিয়েন না,ওনারা যা বলছে তা কিছুই করি নি আমি।সব মিথ্যা।আর আমি শান্তি চাই।তাও বলে ভয় নাই কি হয়েছে বলো শুধু একটু বলছি, অন্তরা বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।তার পর আমার থেকে মুচলেকা লিখে নিল,যা যা বলছে সেই সহকারী প্রক্টর স্যার তাই লিখে দিছি, মুচলেকা টা এমন ছিল যে আমি পরবর্তীতে এমন কিছু করলে হল থেকে বের করে দিবে,২ দিন সময় দিছে।তার পর সেই নেত্রীর সাথে কোলাকুলি করিয়ে দিয়ে বললো যে ছোট মানুষ ভয় পাইছে আজ থেকে তোমার মেয়েদের সাথে ওকে রেখো। আমি তো টানা কান্না করেই যাচ্ছিলাম,তার পর সবাই চলে গেল, নেত্রী বললো তোমার রুমে চলে যাও। আমি ডাইনিং থেকে খাবার নিয়ে একটু কোনো ভাবে খেলাম,সারা রাত ঘুমোতে পারিনি সারা দিন খাওয়া ও নাই। চলে যাওয়ার সময় গণরুম থেকে মিম নামে একটা মোটা মেয়ে বলতেছে ওই দেখে যা গণরুমের নেত্রী সালাম দে, সালাম দিলাম,বলতেছিল এতো কিছুর পরেও তোর গলা দিয়ে ভাত নামলো ক্যামনে!! আমি চুপচাপ চলে গেলাম সন্ধ্যায় স্যার ফোন দিল, বললাম সব সমাধান হয়েছে সমস্যা নেই,যে ভাই হলে তুলছে সে ফোন দিল বললো তোমাকে গণরুমে তুলে নিবে সমস্যা নেই আর।
আপু ফোন দিল, বললাম ঠিক হয়ে গেছে,পরে কিছু হলে জানাবো। বাড়িতে কিছু বলি নি ,কারণ ইবিতে ভর্তি করাতে চেয়েছিল না আমার মা বাবা, যদি সমস্যা এর কথা বলতাম ভাই বোনের উপর রাগ করতো তাই কিছু বলিনি।
রাতে শুয়ে আছি তখন ও আমার কান্না কমছে না খারাপ লাগতেছিল খুব।এর মধ্যে রুমে অপরিচিত অনেকে এসে গল্প করে গেছে রুমের অন্যদের সাথে কিছু খেয়াল করি নি। আমার বেডের আপু বললো আমি কি কাউকে জানাবো এ বিষয়ে ,বললাম না যদি আবার সমস্যা হয় তাহলে আমার বোন কে বলবো নে, স্যার আছে।বেডমেট আপুটা বললো কান্না কান্না ভাব নিয়ে তোমার সাথে তো কিছুই হয় নাই আমার সাথে আরো খারাপ কিছু হয়েছে, নেত্রী অন্তরা আমাদের রুমের ই ২ টা আপুর সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে।তার মধ্যে আমার বেডের আপুর সাথে জঘন্য ব্যবহার করেছে,কি করেছে তা আমি শোনার মতো অবস্থায় ছিলাম না, তিনি বললেন, অনার্স টা শেষ হলেই চলে যাব এখান থেকে। রাত ১১ টায় হাঁপাতে হাঁপাতে এসে হাজির আমাদের রুমে নেত্রী অন্তরা। রুমে এসে বললো এতো সময় দলের সবাই মিলে টিশার্ট বিক্রি করলাম।
রুমের সবাই বসতে দিয়ে খেতে দিল, বললো এখন ই ফুলপরী কে গণরুমে যেতে হবে কয়টা জিনিস নিয়ে যাক পরে নিয়ে যাবে সাথে আরো ২ জন এসেছিল। আমি শুয়ে ছিলাম উঠে সালাম দিলাম। আমাকে নিয়ে গিয়ে যে মারবে এটা এক সেকেন্ড এর জন্য ও ভাবি নি। সাথে ছোট একটা ব্যাগ আর ঠান্ডা এর জন্য কম্বল টা নিয়েছিলাম।ওরা আমাকে নিয়ে গিয়ে দোয়েল ১ এ একটা বেডে বসালো,সব দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে আমাকে চারিদিক থেকে ঘিরে নিয়ে কেউ বসলো ,কেউ সামনে দাঁড়ালো।
আমাকে রাত এগারোটার পর নিয়ে গিয়ে টানা চড়থাপ্পড়। রুমে প্রায় ১৫ জনের মতো মেয়ে ছিল। আশেপাশে আরো তিনটা গণরুম। রুম গুলোর পাশেই ডাইনিং। রুমের সব মেয়েদের চড়া গলায় ভয় দেখিয়ে দিল একটা কথা যদি রুমের বাইরে যায় তাহলে জানে মেরে ফেলবো।ওরা আমাকে কয়েকজন মিলে টানা মাথায় মুখে মারতেছিল, আমার ফোন টা প্রথমেই কেড়ে নিয়েছিল। কেনো মারতেছেন,এটা বলার ভাষা ও হারিয়ে ফেলেছিলাম।ওরা মারতেছিল, কেউ জঘন্য ভাষায় বকা দিচ্ছিল কেউ বলতেছিল,তোর জন্য স্যারের কাছে ধমক খাইছি,কেনো মারতেছি এখন বুঝতে পারছিস,তারা যে যা পারতেছিল বলে মারতেছিল,আমি শুধু তাদের হাতে পায়ে ধরার চেষ্টা করেছিলাম শুরু বলতেছিলাম,আর জীবনেও এমন হবে না আমাকে মারবেন না। আমি যখন ওদের সাথে আসি তখন আমার গায়ে গোল জামা ছিল আর গামছা ছিল কাছে,ওরা সেই গামছা কান্না করলে মুখে ভরে দিচ্ছিল,আর বলতেছিল শব্দ করলে জানে মেরে ফেলবো। এখন তোকে কে বাঁচাবে তোকে এখন ছিঁড়ে খাবো।আর বলতেছিল, এমন জায়গায় মার যাতে কাউকে দেখাতে না পারে ।ওরা আমার থেকে সুইসাইড নোট লিখে নিয়েছিল তখন,যা যা বলে দিচ্ছিল আর মারতেছিল গায়ের যত শক্তি আছে সব দিয়ে, সেখানে আমার পরিবারের সবার ফোন নম্বর লিখে নিয়েছিল। সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল, এমন কূরুচিপূর্ণ কথা বলতেছিলেন যে গুলো ভাষায় বোঝানো যায় না। সুইসাইড নোট লিখে নিয়ে মার এর মাত্রা বাড়িয়ে দিল , কেউ বলতেছিল ওর রুমে গেছিলাম সালাম দেয় নাই , সন্ধ্যা রাতে কে ওই রুমে গেছিল আমি তো দেখিনি বা খেয়াল করি নি। এমনিতেই তো মারতেছিল কিছু মেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই এতো টা বদ হতে পারে সেই দিন না আসলে বুঝতে পারতাম না।কতো গুলো মেয়ের মধ্যে কেউ একটু সাহায্য করা তো দূরে থাক এমন এমন কথা বলেছিল যার জন্য বেশি মার খেতে হয়েছিল। কেউ বলছিল ও ভয় পাচ্ছে না এখন ও,তোর বাবা নাকি সরকারি চাকরি করে আমায় বলছিলি,আমি যেই বলি মিথ্যা কথা এসব বলিনি, এমন মার দেয় বলতে বাধ্য যে হ্যাঁ আমি বলেছি।বলে সেই দিন ২০ টা রুলস শিখায়ে দিলাম রাত আটটায় একটাও মনে নাই?যত বার বলেছিলাম আমি ছিলাম না ততো বার মারে আর বলে আমি নিজে হাতে তোকে শিখাইছি। দুজন দুই দিক থেকে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দিচ্ছিল আর ছাড়তেছিল,আর বলতেছিল তোকে এখন হিটারে হিট দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখব, আমাদের কিছু ই হবে না সুইসাইড নোট লিখেছিস । আমাদের এমপি মন্ত্রী আছে তোর কে আছে এখন কি করবি, ডাইনিং এর বঁটি দিয়ে তোকে কেটে কুকুর দিয়ে খাওয়াব।
টেনে নিয়ে যায় মনে হয় সত্যি ফাঁসি দিয়ে রাখবে।পিন দিয়ে চোখের সামনে নিয়ে বলে চোখ গেলে দিব পায়ে পিন ফুটাতে থাকলে কেউ একজন নিয়ে নিল সুঁই এর মতো পিন টা। জামাকাপড় ধরে টানাটানি শুরু করে দিয়েছিল আমি চেপে ধরে রেখেছিলাম।ওরা মুখ গলা চুল চেপে ধরে মারতেছিল, মুখে ঘুসি দিয়ে চোখের নিচের হাড়টা কালচে করে দিয়েছিল। যখন রাত ২ টা বাজে তখন পাশের রুম থেকে একটা মেয়ে এসে বললো এতো চেঁচামেচির শব্দে ঘুমাবো কেমনে কাল পরিক্ষা। তখন তাকে মনে হলো মেরে নিবে , তারপর আমাকে নিয়ে ডাইনিং এর রুমে নিয়ে গিয়ে একটা চেয়ার এ বসালো ওরা বড় টেবিল এ বসে কেউ, কেউ দাঁড়িয়ে ছিল আমার চারপাশে। ওখানে নিয়ে গিয়ে আরো বেশি মার, মনে হচ্ছিল না আমি বেঁচে থাকবো,ওরা প্রভোস্ট এর নামে খারাপ ভাষায় বকা পেজে লিখে দিল, দিয়ে বললো হেসে হেসে বলবি ,কান্না করলেই এক লাথি দিয়ে মেরে ফেলবো। আমি দেখে দেখে বললাম তারা রেকর্ড করলো ফোনে। আমার ডিপার্টমেন্ট এর সিনিয়র দুই টার নামে লিখে দিয়ে বকা দিতে বললো, এমন জঘন্য ভাষা নিজের নামে লিখেছিল,তারা ঠিক তেমনি ।বলতে চাইনি মারছে, যখন বলেছি তখন রেকর্ড করে রেখেছে। রেকর্ড শেষ হয়েছে যখন তখন গায়ের যতো শক্তি আছে সব দিয়ে আমার মুখে প্রতিটি বকা এর জন্য এক একটা করে থাপ্পড় দিচ্ছিল।মারা শেষ হলে মুখে দাগ হয়ে যাচ্ছিল জন্য ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দিচ্ছিল,১৩ ফ্রেব্রুয়ারি রাত খুব ঠান্ডা একটা মাত্র জামা গায়ে শীতে কাঁপতেছিলাম আমার শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।ওদের থেকে পানি চেয়েছিলাম, বলেছিলাম আমার ব্যাগে ইনহেলার আছে একটু ইনহেলার টা দিবেন আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে,তারা দেয় নাই, পানি একটা ময়লা গ্লাস দিয়ে খারাপ ভাষা বলে বললো চাটেক, গ্লাস টা হাতে দিয়ে এমন মার শুরু করে দিল,মনে হল মার খেয়ে মরে যাওয়া চেয়ে যা বলতেছে শুনি , সকাল হলে যেকোনো উপায়ে এখন থেকে চলে যাব। মানুষ একটা অপরিষ্কার গ্লাসে পানি খেতে চাইনা সেখানে এমন একটা ভাষা বলে গ্লাস চাটার ভিডিও করে নিল কিছু ই বলার নেই। তখন ও ছাড়ে নাই আমায় জামা পায়জামা ধরে টানাটানি শুরু করে দিল আর মার, পানি সহ বড় আরএফএল এর বোতল দিয়ে মারতেছিল তারা এমন ভাবে মারতেছিল যে জামা ছাড়া একটা ভিডিও করে নিয়ে যতো রকম ব্লাকমেইল শুরু করে দিল তারা শেষে গিয়ে আমাকে দিয়ে নাচতে বলেছিল ।তারা মেরে দেখাচ্ছিল আমি যে ভাবে নাচছি এভাবে নাচ, তার ভিডিও ছিল তাদের কাছে।
সব মিলে আমাকে বললো ২ দিন আমাদের সাথে থাকবি প্রভোস্ট স্যার এর কাছে কিভাবে খারাপ হবি শিখিয়ে দিছি,আর হল ছেড়ে চলে যাবি আর জীবনেও এই হল এর দিকে আসবি না।আর আজকের কথা কাউকে বলিস যদি তাহলে আমাদের নেতাদের দিয়ে তোকে রেপ করিয়ে জান এ মেরে ফেলবো, ভিডিও আছে সব অনলাইনে দিয়ে দিব।তাই বলে প্রথমে যেখানে বসায়ছিল ওখানে নিয়ে গিয়ে বললো ফাঁসি নিস না আবার ২ দিন যা বলবো তাই করবি।তাই বলে সবাই যার যার রুমে ঘুমাতে চলে গেল। দেখি ওই বেডে আমার ফোন পরে আছে।রাত ৪.৩০ বাজে আমি আমার বোন কে তিন-চার ম্যাসেজ দিলাম। সাথে সাথে উত্তর আসলো, বললাম যেকোনো উপায়ে এখান থেকে আমাকে বের করতে নাহলে সারাদিন চোখে চোখে রেখে তারা কাল রাতে আবার মারবে আমাকে।
আমি খুব ভোরে তিন তলায় গেছিলাম শুধু টাকা টা বড় ব্যাগ থেকে নিয়ে আমার সাথে যা হয়েছে তা কিছুই না বলে একটা আপুকে বললাম ব্যাগ এখানে রেখে গেলাম পরে নিয়ে যাব।হল গেট থেকে ভ্যানে উঠে ক্যাম্পাস গেটে এর সামনের কাউন্টার থেকে পাবনা টার্মিনাল এর বাস আসতে হবে জন্য ঈশ্বরদী পর্যন্ত যাবে এমন একটা বাসে উঠে পড়লাম।এতো ভয় তারা দেখায়ছিল,তাই ফোন টা বন্ধ করে রাখলাম মাথা মুখে এতো মারছে যে ব্যাথা ,যন্ত্রনা সহ্য হচ্ছিল না,আপু গ্রামের স্যার কে বলছে স্যার শহর থেকে হল এ গিয়ে দেখে আমি নাই, আমি ফোন খুললে সবাই ফোন দিতে থাকে কারো ফোন ধরি নি। শুধু আমার বোন কে বলেছি বাড়ি যাচ্ছি, গাড়িতে। বাড়ি এসে সব বললাম চোখে মুখে মার এর কালশিটে দাগ পড়ে ফুলে গেছে,কোনো খাবার খেতে পারছিলাম না মুখের ভেতরে কেটে ফেটে গিয়েছিল,গলা ব্যাথা হয়ে ছিল।পরের দিন খুব সকালে বাবা এবং ভাইয়ের সাথে ক্যাম্পাসে গেলাম, ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ,কারণ ক্যাম্পাসে তখন ছাত্রলীগের জয়জয়কার আওয়ামী অনুসারী প্রায় শিক্ষকই। তারপর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর ডিপার্টমেন্ট,হল সহ আরো দুই এক জায়গায় লিখিত অভিযোগ দিলাম । সবাই শুধু সহানুভূতি দেখানো পর্যন্তই, কেউ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনো বিচার ব্যবস্থা করতে পারবে না। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ যা বলবে তাই শুনতে শিক্ষকরা বাধ্য এমন পরিবেশ ছিল। একবার ২ টা সহকারী প্রক্টর,প্রভোস্ট মিলে মিমাংসা করে দিয়েছিল তার পর ও সারা রাত যে নির্যাতন টা চালালো, আমাকে মারার পেছনে শুরু সেই নেত্রীর ই ছিল না,ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সবাই পরামর্শ করে ,পরিকল্পনা করেই, নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার জন্য এমন জঘন্য কাজ করেছিল। বলেছিল ২ দিন ধরে মার দে এমনিতেই হল ছেড়ে চলে যাবে।আর মারতে মারতে মরে গেলে গুম করি আর যাই করি আমাদের উপর ছেড়ে দে। এজন্য সুইসাইড নোট লিখে নিয়েছিল। আরো অনেক ছেলেদের ও মার দিয়েছে, ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে ওই নেত্রী অন্তরা। পরিস্থিতি খারাপ দেখে বাড়ি আসার সময় কুষ্টিয়া দেশ টিভি চ্যানেল এ নিউজ করে দিলে মূহুর্তে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তখন বিভিন্ন টিভি চ্যানেল পত্র পত্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে নিউজ টি, আমি ন্যায় বিচার ও নিরাপত্তা পাওয়ার জন্য নিউজ করেছিলাম। দেশের প্রতিটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে Ragging নামক শব্দটি ব্যবহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দিনের পর দিন মানুষিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। ছাত্রলীগের ভয়ঙ্কর রূপ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের রক্ষা হয় নাই,কতো শিক্ষার্থী এদের নির্যাতনের শিকার হয়ে ও দিনে পর দিন চুপ করে সব সহ্য করে গেছে।ইবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দ্বারা অনেক শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হয়েছেন, অপমানের শিকার হয়েছেন। আমার ঘটনা টা প্রকাশ হলে অনেক শিক্ষার্থী তাদের নির্যাতনের কথা বলতে শুরু করেছিল। আমার উপর প্রচুর চাপ আসতেছিল যে কোনো সময় বলতে হবে এমন কোনো ঘটনা হয় নাই আমার সাথে ,সব মিথ্যা।
গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী গাজী মোঃ মহসীন রিট করেন। আমি আইনজীবী মহসিন স্যারের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। তাঁর মতো মহৎ আইনজীবী বাংলাদেশ আরো সৃষ্টি হোক এই কামনাই করি। তারপর ঘটনার সত্যতা প্রমাণের জন্য তিনটা তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছিল।হল কর্তৃপক্ষের একটি , বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃপক্ষের এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিলে তিন টি কমিটির গঠন হয়। সেন্টাল থেকে ছাত্রলীগের ও একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়। সব কিছুর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছিল।ইবি ছাত্রলীগের সদস্যরা তদন্তের নামে ফোনে ১ ঘন্টার ও উপরে আমার সাথে তর্ক করে গিয়েছিল সেই অন্তরা কে নির্দোষ করার জন্য। সেই সময় বিভিন্ন সাংবাদিক থেকে শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ আমার বাড়ি আসতে থাকলো। এলাকার মানুষ ইতিবাচক নেতিবাচক যে যার যার মতো মন্তব্য করেছে। আমার এলাকার আওয়ামী লীগের অনুসারীরা গোপনে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান কে দিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন যে আমি শিবির সংগঠনের সাথে যুক্ত আছি। আমি অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য দুই দিন কুষ্টিয়া কোর্টে গিয়েছিলাম, চারিদিক শুধু আওয়ামী লীগের জয়জয়কার তাই ওদের সাথে যুদ্ধ করে একা টিকে থাকা কঠিন এটা ভেবে আর মামলা তে যায় নি।চারিদিক থেকে এতো চাপ আসতেছিল যে একা সামলাতে পারছিলাম না। সাধারণত শিক্ষার্থীরা সবাই আমাকে সমর্থন করেছিলেন কিন্তু ছাত্রলীগের ভয়ে তারা কিছু করতে পারে নাই।চুপ করে থাকা ছাড়া তাদের উপায় ছিল না। আমি যখন ক্যাম্পাসে ক্লাস করার জন্য গেলাম তখন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল এ উঠি, হল এ আমার ব্যাচের ই কেউ আমার সাথে মিশতে চাইতো না ভয়ে,বাইরে কিছু কেনার দরকার হলে বন্ধু দের সাথে যেতাম, দেখতাম তারা ও ছাত্রলীগের নেতারা দেখে ফেলবে জন্য,পরে তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হয় এই ভয়ে থাকতো। আমি খুব সাবধানে চলাফেরা করতাম ক্যাম্পাসে। বিভিন্ন সময়ে চাপ আসতো তাদের ক্ষমা করে দেওয়া। শিক্ষকদের দিয়ে বলাতো ইবি ছাত্রলীগ। প্রায় একবছর পর অভিযুক্ত ৫ জন আজীবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়ে গেল।
তারপর ক্যাম্পাসে Ragging এর বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিলো চারিদিক ব্যানার টানানো ,Rally হচ্ছিল।এর মাঝে অনেক গুলো শিক্ষার্থী Ragging এর জন্য বহিষ্কার হয়েছে।
জুলাই এর পর থেকে স্বাভাবিক ভাবে ক্যাম্পাসে চলাচল করতে পারি , সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেনো দীর্ঘ সময় বন্দী থেকে মুক্তি পেয়েছে।তবে অন্য রাজনৈতিক দল গুলো স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ক্যাম্পাসে রাজনীতি করছে। শিক্ষার্থীদের LeaderShip Skills এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি থাকা টা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু বেশি ভাগ সময় এসব রাজনীতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। শিক্ষা পরিবেশ নষ্ট করে এরা নিজেদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের করার জন্য। দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, সেই হিসেবে আমার মতে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র রাজনীতি না থাকায় ভালো।
দেশে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ রাজনৈতিক দলের প্রতি টি নেতাকর্মী চরম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের দের অত্যাচার জুলুম করেছে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এই স্বৈরাচারীর পতন হয়েছে।
আমি একটু হলেও অনুধাবন করতে পারি আওয়ামী লীগ/ ছাত্রলীগের আসলে কতো টা ভয়ঙ্কর। বর্তমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে দল গঠন করেছে এটা বাংলাদেশের আগামী রাজনীতির পরিসরের জন্য ভালো। নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে দেশের কল্যাণ করতে পারলে ভালো। আমি বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের মঙ্গল কামনা করি,তারা সামনে এগিয়ে যাক ,সৎ উদ্দেশ্য সফল করুক।
আমি মোছা: ফুলপরী খাতুন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আমার একাডেমিক রেজাল্ট মোটামুটি ভালো আছে। এক বছর বিভিন্ন জটিলতার কারণে একাডেমিক পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে অনেকটা।
সব মিলে আমি এখন ভালো আছি।সবার কাছে আমি দোয়া প্রার্থী আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখেন আমি আমার পবিরার, আমার দেশ, বাংলাদেশ কে ভালোবাসি , আমি আমার দেশের সেবায় নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত রাখতে চাই।

ফুলপরী খাতুন
মোছা: ফুলপরী খাতুন । কুষ্টিয়া,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। জেলা: পাবনা, উপজেলা:আটঘরিয়া, ইউনিয়ন: একদন্ত, পোষ্টঅফিস: শিবপুর গ্রাম: শিবপুর ।